শিব মাহাত্ম্যের অমৃতকথা ২য় পর্ব
✍🏾সোমনাথ মুখোপাধ্যায়
স্বতঃ, রজঃ, তমঃ তিন পরম গুণের আধার শিব। অর্থাৎ তাঁর মধ্যেই সাত্ত্বিক, রাজসিক, তামসিক তিন গুণ। তিনিই আবার এই তিন গুণের অতীত ত্রিগুণাতীত শঙ্কর।
শিবলিঙ্গের বিভিন্ন অংশ অর্থাৎ ব্রহ্মপট, গৌরীপট, বিষ্ণুপট, রুদ্রপটের কথা আগেই হয়েছে। এবার আসা যাক বিভিন্ন প্রকারের শিবলিঙ্গের কথায়। কিছু শিবলিঙ্গ স্বয়ম্ভু লিঙ্গ অর্থাৎ যে শিবলিঙ্গ আপনা আপনিই প্রকট হয়েছে। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠা করা শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত শিবলিঙ্গ অর্থাৎ যাকে মানুষ প্রতিষ্ঠা করেছে। আবার আঙুল সমান শিবলিঙ্গকে বলা হয় বাণলিঙ্গ অর্থাৎ হাতের মুঠোর মধ্যে যাকে ধরা যায়। পৌরাণিক উপাখ্যান অনুযায়ী গঙ্গার জলে স্নান করতে নেমে দু হাতের মুঠোয় গঙ্গামাটি নিয়ে ছুঁড়ে দিতেন বাণ রাজা। সেগুলিই শিবলিঙ্গের আকার ধারণ করত। এগুলিই বাণলিঙ্গ। ফিরে আসা যাক স্বয়ম্ভু লিঙ্গের কাছে। যত স্বয়ম্ভু লিঙ্গ আছে তার মধ্যে বারোটিকে জ্যোতির্লিঙ্গ আখ্যা দেন ভারতবিশ্রুত মহাসাধক জগৎগুরু শঙ্করাচার্য। এদের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে বিশ্বেশ্বর বিশ্বনাথ, গাড়োয়াল উত্তরাখন্ডে কেদারেশ্বর কেদারনাথ, মহারাষ্ট্রের নাসিকে ত্রম্বকনাথ ত্রম্বকেশ্বর, নাগনাথ নাগেশ্বর, ঘৃষ্ণেশ্বর, গুজরাটে সোমেশ্বর সোমনাথ, মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বর, ওঙ্কারনাথ ওঙ্কারেশ্বর, ভীমাশঙ্কর, ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে বৈদ্যনাথ বা রাবণেশ্বর শিব, দক্ষিণ ভারতে রামনাথ রামেশ্বর ও মল্লিকার্জুন এই শিবলিঙ্গগুলি দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ বলে খ্যাত। বিশ্বাস যে এই জ্যোতির্লিঙ্গের দর্শন, পুজো করলে প্রভূত পূণ্য অর্জন করা যায়। এখানে একটি কথা উল্লেখ করা যায় যে সমস্ত জ্যোতির্লিঙ্গ উত্তরমুখী কিন্তু একমাত্র উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বর দক্ষিণমুখী যা কিনা বিশেষ আধ্যাত্মিক গুরুত্ব বহন করে।
মহাদেবং মহাত্মানং মহাযোগীং মহেশ্বরম্। মহাপাপ হরং দেবং মকারায়ঃ নমো নমঃ। ওঁ নমঃ শিবায়।
(চলবে)
সাব এডিটর – অনুরাধা ভট্টাচার্য্য শর্মা, রামানন্দ দাস, প্রতীক চ্যাটার্জী
ম্যানেজার – বুবুন মাইতি
এডিটর – দিব্যেন্দু দাস
এডিটর ইন চিফ – রাকেশ শর্মা
