*ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হলো মৃত বিতান অধিকারীর স্ত্রীকে*
নবনীতা পাল, Rong News
সপরিবারে ভূস্বর্গে ঘুরতে গিয়ে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন কলকাতার বাসিন্দা বিতান অধিকারী। তার মৃত্যুর পর থেকেই বিতান অধিকারীর স্ত্রী সোহিনী অধিকারীর স্ত্রীর নাগরিকত্ব নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। তিনি নাকি আদতে বাংলাদেশের বাসিন্দা। অবৈধ ভাবে ভারতে বাস করছেন। আর এই অভিযোগ খোদ করা হয়েছে তার পরিবারের তরফ থেকে। বিতান অধিকারীর দাদা অভিযোগ করে জানিয়েছিলেন, তার ভাইয়ের বউ বাংলাদেশের নাগরিক। ভারতে জোর করে বসবাস করছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, এই খবর ছড়াতেই শুরু হয় শোরগোল। একে অপরকে দোষ, পাল্টা দোষে তৈরি হয় রাজনৈতিক তরজাও। কীভাবে একজন বাংলাদেশি নাগরিক এতদিন ধরে কোনও ভিসা ছাড়াই ভারতে রয়েছেন? এসব বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে শনিবার বিতান অধিকারীর স্ত্রী সোহিনী অধিকারীকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দিলো কেন্দ্রীয় সরকার। এ কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এদিন তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ”বিতান অধিকারী, যাঁকে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিরা মেরেছিল, তাঁর স্ত্রী সোহিনী রায়কে ভারত সরকার নাগরিকত্ব দিয়েছে। বহু আগে বিবাহসূত্রে তিনি নাগরিকত্বের আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদনকে ভারত সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে। এর জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।” তবে শুধু সুকান্ত মজুমদারই নয়, এতদিন পর ভারতের নাগরিকত্ব মেলায় কেন্দ্রীয় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সোহিনী অধিকারীও।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু কাশ্মীরের অন্ততনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের হাতে নৃশংস ভাবে খুন হতে হয় কলকাতার বৈষ্ণবঘাটার বাসিন্দা বিতান অধিকারীকে। স্বামীর দেহ নিয়ে কলকাতায় ফিরতেই ঘরে-বাইরে তার নাগরিকত্ব নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। জানা গিয়েছে, কঠিন এই পরিস্থিতিতে তার পরিবার পাশে দাঁড়ালেও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কাছে তাঁকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। সবথেকে বেশি তার সমালোচনায় সরব হন বিতান অধিকারীর দাদা বিভু অধিকারী। শুধু তাই নয়, ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য সরাসরি তিনি সোহিনী অধিকারীকে দায়ি করে অভিযোগ করে জানান যে, সোহিনীই তার ভাইকে জোর করে কাশ্মীরে ঘুরতে নিয়ে গিয়েছিল। তারা কাশ্মীর না গেলে তাদের পরিবারের আজকে এই দিন দেখতে হত না।
শুধু তাই নয়, বিতান অধিকারীর দাদা বিভু অধিকারী আরও অভিযোগ করে জানান, সোহিনী আদতে বাংলাদেশের নাগরিক। ভাইয়ের সঙ্গে বিবাহসূত্রে ভারতের যা পরিচয়পত্র রয়েছে সোহিনীর, সেসবই ভুয়ো বলেও দাবি করেন তিনি। তার দাদার অভিযোগ, নথি সংক্রান্ত সমস্যার কারণেই ২০২৩ সালে আমেরিকার ফ্লোরিডা থেকে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন সোহিনী। তারপর থেকে বৈষ্ণবঘাটার বাড়িতে ছেলেকে নিয়ে থাকতেন তিনি। অভিযোগ, তাঁর পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ফেব্রুয়ারি মাসেই। সে অর্থে অবৈধভাবেই এদেশে সোহিনী বসবাস করছেন বলে অভিযোগ তোলেন বিতানের দাদা বিভু। এমনকী তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো পাসপোর্ট-সহ ফৌজদারি ধারায় একাধিক মামলা রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। এমনকি তিনি অভিযোগ করে আরও জানান, ভারতে থাকতে চেয়ে সোহিনীর করা আবেদনও খারিজ হয়ে গিয়েছে।
এদিকে জীবনেক এরকম কঠিন সময়ে ঘরের লোকের কাছ থেকে সমালোচনার শিকার হতেই সোহিনী অধিকারীর নাগরিকত্ব নিয়ে শুরু হয় টানাপোড়েন। তার ভাশুরের অভিযোগ সত্যি কিনা তা জানতে সমালেোচনার জল গড়ায় সোশ্যাল মিডিয়া পর্যন্ত। শুরু হয় দুপক্ষের কাদা ছোঁড়াছুড়ি। এরই মধ্যে শনিবার কেন্দ্রের তরফে সব বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে সোহিনী অধিকারীকে দেওয়া হল ভারতীয় নাগরিকত্ব। ভারত-পাক যুদ্ধের আবহে এ দেশের নাগরিকত্ব পেলেন সোহিনী অধিকারী।
সাব এডিটর – অনুরাধা ভট্টাচার্য্য শর্মা, সোমনাথ মুখোপাধ্যায়,প্রতীক চ্যাটার্জী
ম্যানেজার – বুবুন মাইতি
এডিটর – দিব্যেন্দু দাস
এডিটর ইন চিফ – রাকেশ শর্মা