মহাবীর হনুমান স্বয়ং শিব

Views: 63
1 0

মহাবীর হনুমান স্বয়ং শিব

 

সোমনাথ মুখোপাধ্যায়:Rong News

 

সদ্য সমাপ্ত হয়েছে যুদ্ধ। সকলেই শ্রান্ত, ক্লান্ত। এখন কিছুটা বিশ্রাম। রাম রাবণের যুদ্ধ তো কম কথা নয়! একদিকে প্রবল পরাক্রান্ত লঙ্কাধিপতি রাবণ। সঙ্গে মেঘনাদ ইন্দ্রজিৎ, প্রহস্তের মতো মহারথী পুত্ররা। অনুজ কুম্ভকর্ণের মতো ভয়ঙ্কর যোদ্ধা। বজ্রমুষ্ঠী, দুর্মুখ, বিড়ালাক্ষের মতো তাবড় সেনাপতি ও প্রবল পরাক্রান্ত রাক্ষস সেনা তো অন্যদিকে মহান যোদ্ধা অজেয় বীরশ্রেষ্ঠ পুরুষোত্তম মর্যাদাপুরুষ রামচন্দ্রের সঙ্গে অনুজ লক্ষণ, কিস্কিন্ধ্যার বানররাজ বীর সুগ্রীব, বালীপুত্র বীর যুবরাজ অঙ্গদ, অতুলনীয় শক্তিশালী পবনপুত্র মহাবীর হনুমান, বীর জাম্ববান ও দুর্ধর্ষ বানর সেনা। তুমুল যুদ্ধের পর জনকনন্দিনী মা সীতা ফিরে এসেছেন দাশরথি রামের কাছে। এখন ‘ওয়ার ফ্রন্টে সিজ্ ফায়ার’! শান্ত যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয়ের আনন্দ পালনে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে। স্মিত হেসে অনুমতি দিয়েছেন রাম। যুদ্ধে আগাগোড়া বিরাট ভূমিকা পালন করা হনুমানের জন্য আলাদা ব্যবস্থা। স্বয়ং মা সীতা নিজে হাতে পোলাও, ব্যঞ্জন রেঁধে পরিবেশন করে সস্নেহে খাওয়াচ্ছেন হনুমানকে। ‘রান্না কেমন হয়েছে বাবা হনুমান?’

‘মা এত সুন্দর খাবার আমি কখনো খাইনি। ওই একটু আম, কলার মতো সামান্য ফলপাকুড় খেয়ে আমার দিন কাটে। ভালো করে না খেলে গায়ে জোর থাকবে কীভাবে বলো তো মা!’

‘ঠিকই তো বাছা। তুমি খাও। পেট ভরে খাও।’

চলছে খাওয়া। খাওয়া মানে তুমুল খাওয়া। সীতা দিচ্ছেন। হনুমান খাচ্ছেন। খেয়েই যাচ্ছেন। প্রচুর পরিমাণে খাবার স্রেফ উড়ে গেল! কিন্তু হনুমানের পেট ভরল না!এদিকে খাবার কমে আসছে। সীতা পড়লেন চিন্তায়। ‘পেট ভরেনি বাছা?’

‘না মা, এখনো প্রচন্ড খিদে। যত খাচ্ছি ততই খিদে বেড়ে চলেছে!’ সীতার মুখ শুকিয়ে আসে। কী করা যায়? অগত্যা প্রভু রামের শরণাপন্ন হলেন সীতা। ‘প্রভু আমি তো বুঝতে পারছি না কী হচ্ছে। খাবার প্রায় শেষ। এদিকে হনুমান তো গপগপিয়ে খেয়েই চলেছে।’

‘কই মা, আরেকটু পোলাও দাও। ধোঁকার ডালনাটা দুর্দান্ত হয়েছে। ওটাও একটু দিও। আর কটা বেগুনি।’ হাসিমুখে মাটিতে বসা হনুমানের পিছনে এসে দাঁড়ালেন স্বয়ং রঘুবীর। হনুমানের অজান্তেই মাত্র দুটি ভাতের দানা ছড়িয়ে দিলেন হনুমানের মাথার ওপর। ‘মা আর লাগবে না। পেট একেবারে টইটম্বুর।’ উঠে পড়ে মুখ ধুতে গেলেন মহাবলী হনুমান। হতবাক সীতাকে রাম বললেন, ‘কাকে খাওয়াচ্ছিলে জানো? ওকে তুমি জীবনে খাইয়ে সন্তুষ্ট করতে পারবে না! ও যে বিশ্বদর বিশ্বেশ্বর শিব। অর্থাৎ গোটা বিশ্বটাই ওর উদর। সেই পেট কীভাবে ভরাবে প্রিয়ে! শিব যে আশুতোষ। অর্থাৎ অল্পেই তুষ্ট। ফলে মাত্র দুটি ভাতের দানাই তাঁর সন্তুষ্টির জন্য যথেষ্ট। তাই তো পুজোর সময় যৎসামান্য নৈবেদ্য শিবের মাথায় দিতে হয়। নচেৎ তাকে তুমি সন্তুষ্ট করতেই পারবে না। শিব খুশি তো হনুমানও খুশি।’ স্মিত হেসে বললেন শিবভক্ত রামচন্দ্র।

তাই তো মহাতেজা মহাত্মা হনুমান হলেন মহারুদ্র। শিবের রুদ্র রূপ তিনিই। আশুতোষ শিব যেমন অল্পেই তুষ্ট ঠিক তেমনই ভক্তের ভগবান হয়ে অল্পেই তুষ্ট পবননন্দন হনুমান। তিনিই সর্বদা রামনাম জপ করেন। তাঁর থেকে বড়ো ভক্ত যে ত্রিভুবনে আর কেউ নেই। জাম্ববানের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, যে তিনি বেদ, পুরাণ, শাস্ত্র সব ভুলে গিয়েছেন। তিনি শুধু এক রাম চিন্তা করেন। হনুমান সদা সর্বদা রামময়।

 

 

 

 

 

 

 

সাব এডিটর – অনুরাধা ভট্টাচার্য্য শর্মা, রামানন্দ দাস, প্রতীক চ্যাটার্জী

ম্যানেজার – বুবুন মাইতি

এডিটর – দিব্যেন্দু দাস

এডিটর ইন চিফ – রাকেশ শর্মা

Happy
Happy
1
Sad
Sad
0
Excited
Excited
0
Sleepy
Sleepy
0
Angry
Angry
0
Surprise
Surprise
0

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *