অশুভ শক্তির বিনাশ ন্যাড়া পোড়া
সোমনাথ মুখোপাধ্যায়:Rong News
কথায় আছে ‘আজ আমাদের ন্যাড়া পোড়া কাল আমাদের দোল’। দোলের ঠিক আগের দিন হয় চাঁচর উৎসব বা হোলিকা দহন বাংলায় যা চলতি কথায় ন্যাড়া পোড়া বলে খ্যাত। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় দোলযাত্রা। দোলযাত্রা বা হোলি রংয়ের উৎসব। দোল বা হোলির ঠিক আগে খড় দিয়ে পুতুল বানিয়ে তা আগুনে জ্বালানোর মাধ্যমে পালিত হয় হোলিকা দহন। জানা যায়, হোলিকা দহন প্রথম পালিত হয় অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের মুলতানের প্রহ্লাদপুরী মন্দিরে। পরবর্তীতে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে এই হোলিকা দহন উৎসব।
হোলিকা দহনের পিছনে রয়েছে পৌরাণিক উপাখ্যান। ব্রহ্মার বরে বলীয়ান হয়ে প্রবল অত্যাচারী হয়ে ওঠেন দৈত্যরাজ হিরণ্যকশিপু। ব্রহ্মার বরে ঘরে বাইরে, আকাশ বা ভূমিতে তিনি অবধ্য। তাঁর পুত্র প্রহ্লাদ প্রবল বিষ্ণু ভক্ত। শ্রীহরি ছাড়া কিছুই জানে না প্রহ্লাদ।এদিকে বিষ্ণুকে কোনোভাবেই মানেন না হিরণ্যকশিপু। পুত্র প্রহ্লাদের হরি ভজনা ভালো চোখে দেখতেন না তিনি। শাস্তি হিসাবে কখনো উন্মত্ত হাতির পায়ের নিচে ফেলে দেওয়া, পর্বত শিখর থেকে নিচে ছুড়ে ফেলা হলো প্রহ্লাদকে। প্রতিবারই অলৌকিক উপায়ে বেঁচে গেল প্রহ্লাদ। নানা ধরনের অত্যাচার করেও ভক্ত প্রহ্লাদকে উপযুক্ত শাস্তি দিতে না পেরে ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন ক্ষমতার মদগর্বে গর্বিত দৈত্যরাজ। সমস্যার সমাধান এগিয়ে এলেন দৈত্যরাজের বোন হোলিকা। ব্রহ্মার বরে আগুন কোনোও ক্ষতি করতে পারত না হোলিকার। ভাইপো প্রহ্লাদকে কোলে তুলে আগুনে প্রবেশ করেন হোলিকা। ভক্তের ভগবান বিষ্ণু। আগুনে পুড়ে মরলেন হোলিকা। বেঁচে গেল প্রহ্লাদ। সেই থেকে শুভ শক্তির জয় ও অশুভ শক্তির বিনাশ হিসাবে পালিত হয়ে আসছে হোলিকা দহন বা ন্যাড়া পোড়া।
সাব এডিটর – অনুরাধা ভট্টাচার্য্য শর্মা, প্রতীক চ্যাটার্জী
ম্যানেজার – বুবুন মাইতি
এডিটর – দিব্যেন্দু দাস
এডিটর ইন চিফ – রাকেশ শর্মা
