৬৬ বছর বয়সে সাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণে লি ডংজু
সোমনাথ মুখোপাধ্যায়:Rong News
বয়স যে শুধুই একটি সংখ্যা মাত্র তা প্রমাণ করে দিয়েছেন চীনের ৬৬ বছর বয়সী বৃদ্ধা লি ডংজু। প্রমাণ করে দিয়েছেন তীব্র ইচ্ছাশক্তি আর মনের জোর থাকলে অসম্ভবকে সম্ভব করা কঠিন নয়। যে বয়সে মানুষ অবসর যাপন করে সে বয়সে একা সাইকেল চালিয়ে ১০০টি দেশ তথা গোটা বিশ্ব ভ্রমণের লক্ষ্যে নেমেছেন মধ্য চীনের হেনান রাজ্যের ঝেংঝৌ শহরের লি ডংজু। ইতিমধ্যেই রাজধানী বেজিং, সাংহাই সহ চীনের ২০টি শহর সাইকেলে ঘুরে আসার পাশাপাশি তিনটি মহাদেশের মধ্যে এশিয়ার মায়ানমার, কাম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ওশিয়ানিয়ার অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সহ ১২টি দেশ ঘুরে এসেছেন লি। ঘুরে এসেছেন ইউরোপের ফ্রান্স। তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য কাজাখস্তান থেকে আরব আমিরশাহি পর্যন্ত ভ্রমণের। তাঁর কথায়, ভ্রমণ একটা নেশার মতো যা শুরু করলে থামা যায় না। ১০০টি দেশ ঘোরার উদ্দেশ্যে তাঁর সাইকেল চলছে, চলবে।
সূত্রের খবর, একটি কাপড় তৈরির কারখানায় কাজ করা লি ডংজু ছিলেন অতি সাধারণ ঘরের গৃহবধূ। ২০১৩ সালে বিবাহবিচ্ছেদের পর চূড়ান্ত মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকেন লি। সঙ্গী ছিল পোষা কুকুর জিলি। তাঁর কথায়, একদিন রাস্তায় একদল সাইকেল আরোহী দেখে সাইকেলে ঘুরে বেড়ানোর বিষয়ে অনুপ্রাণিত হন তিনি। ততদিনে চাকরি হারানো লি বাধ্য হয়ে গৃহ পরিচারিকার কাজ নেন। টাকা জমিয়ে কিনে ফেলেন সাইকেল ও হেলমেট। বাকিটা ইতিহাস। পোষ্য জিলিকে সঙ্গে নিয়ে সাইকেলে ঘুরে আসেন নিজের দেশের ২০টি শহর। পরে তিব্বত ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন তিনি। স্বল্প বাজেট ও শুধুমাত্র মাতৃভাষা ম্যান্ডারিন জানা লি পড়েছেন ভাষা সমস্যায়। অর্থ কম। ফলে রাত কাটিয়েছেন রাস্তায়, পার্কে, গ্যাস স্টেশনে। এমনকি গোরস্থানেও রাত কাটাতে বাধ্য হন তিনি। সাইকেল চালাতে চালাতে প্রতিকূল আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে। কখনও বা সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় মানুষ। কখনও আসেননি। তবে কোনোও কিছুই দমিয়ে দিতে পারেনি লিকে। ভাষা অনুবাদ অ্যাপের সাহায্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সাইকেলে বেঁধে প্যাডেল চালিয়ে ঘুরে চলেছেন পাহাড় থেকে সমতল।
একান্ত সঙ্গী জিলিকে হারিয়েছেন বেশ কিছুদিন। সাময়িকভাবে মন খারাপ হলেও তাতে পাত্তা না দিয়ে ফের সাইকেলে উঠে বসেছেন লি। তাঁর কথায়, আগে নিজেকে মনে হতো কুয়োর ব্যাঙ। এখন বন্য নেকড়ে যে কিনা স্বাধীন, নির্ভীক, আত্মনির্ভর।
সাব এডিটর – অনুরাধা ভট্টাচার্য্য শর্মা, সোমনাথ মুখোপাধ্যায়,প্রতীক চ্যাটার্জী
ম্যানেজার – বুবুন মাইতি
এডিটর – দিব্যেন্দু দাস
এডিটর ইন চিফ – রাকেশ শর্মা
