সাধু সেবা করে মুক্তি পেল অশরীরী
সোমনাথ মুখোপাধ্যায়:Rong News
এই তীর্থ থেকে সেই তীর্থ ঘুরে চলেছেন ব্রহ্মচারী। বলা ভালো পরিব্রাজক রূপে দর্শন করে চলেছেন কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী একের পর এক তীর্থ। যেখানে যান সেখানেই তাঁর সাধনালব্ধ তেজোদীপ্ত চেহারার সামনে নতজানু হয় সংসার তাপদগ্ধ অসংখ্য মানুষ। মহান তাঁর লীলা। তিনি ভারত বরেণ্য মহাসাধক বালানন্দ ব্রহ্মচারী।
সেবার ঘুরতে ঘুরতে মহারাজ এসেছেন বাংলার নদীয়া জেলার রানাঘাটে। গন্তব্য সরকারি আধিকারিক রামচরণ বসুর বাড়ি।রানাঘাটের এসডিও রামচরণ বসু একজন বড়ো শিকারী। তাঁর থেকে একটি বাঘের ছাল চান ব্রহ্মচারী যা সাধন আসনের কাজে লাগবে। বন্দুকের গুলির দাগ লাগা ছাল পছন্দ হলো না বালানন্দের। ফিরে গেলেন তিনি। তখন আকাশ ভেঙে জোর বৃষ্টি। মায়ের অনুরোধে সাধুর খোঁজে ছাতা মাথায় বাইরে বেরুলেন রামচরণবাবু। কী দেখলেন! একটি গাছের নিচে ধুনি জ্বালিয়ে ধ্যানে নিমগ্ন সেই সাধু। অঝোরে জল পড়ছে। কিন্তু তাঁর গায়ে একফোঁটা জল নেই! সাধুর পায়ে পড়লেন রামচরণ বসু। তখন ইংরেজ আমল। দপ্তরে গুরুতর অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় তাঁকে। তাঁর আকুল প্রার্থনা সাধুকে জানালেন রামচরণবাবু। স্মিত হেসে অভয় দিলেন ব্রহ্মচারী। এর কিছুদিন পর সমস্ত অসুবিধা দূর হলো। ডেপুটি ম্যাজিসট্রেট পদে উন্নীত হলেন রামচরণ বসু!
রানাঘাট থেকে বালানন্দ ব্রহ্মচারী এলেন কল্লোলিনী তিলোত্তমা শহর কলকাতায়। সঙ্গে একজন সেবক শিষ্য। আশ্রয় নিলেন উত্তর কলকাতার পাইকপাড়া অঞ্চলের এক পোড়ো বাড়িতে। ভৌতিক উপদ্রবের কারণে কেউ সেখানে থাকতে পারে না। লোকমুখে সেটি ভূতের বাড়ি বলে পরিচিত। রাতের খাওয়ার পর মেঝেতে শুয়ে বিশ্রাম করছেন মহারাজ। তাঁর পদসেবা করছে শিষ্যটি। খানিক পরে মহারাজ শিষ্যকে বিশ্রাম নিতে বললে শুয়ে পড়ে সে। কিছুক্ষণ পর মহারাজ বুঝলেন ফের তাঁর পা টিপে দিচ্ছে কেউ! চোখ খুলে দেখেন একটি ছায়া শরীর তাঁর পায়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে! তিনি উঠে বসতে হাতজোড় করে নমস্কার করে বাতাসে মিলিয়ে গেল সেই ছায়া শরীর! ইষ্টদেব শিবের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা জানিয়ে শুয়ে পড়লেন মহারাজ। পরদিন থেকে সেই বাড়িতে বন্ধ হয়ে গেল ভৌতিক উপদ্রব। ফিরে এল বাড়ির মালিক। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল এলাকাবাসী। এমনই অত্যাশ্চর্য ছিল বালানন্দ ব্রহ্মচারীর মহান লীলা।
সাব এডিটর – অনুরাধা ভট্টাচার্য্য শর্মা, সোমনাথ মুখোপাধ্যায়,প্রতীক চ্যাটার্জী
ম্যানেজার – বুবুন মাইতি
এডিটর – দিব্যেন্দু দাস
এডিটর ইন চিফ – রাকেশ শর্মা