সম্পর্কে সেতু এসআইআর
সোমনাথ মুখোপাধ্যায়:Rong News
মেলাল সে মেলাল। সৌজন্যে রাজ্য জুড়ে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনী প্রক্রিয়া বা এসআইআর। আসলে অস্তিত্ব রক্ষার দায় বড়ো দায়। তাই দীর্ঘদিন সম্পর্ক না রাখা বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই পাওয়া বাবা মায়েদের সঙ্গে ফের দেখা করতে চলেছেন তাঁদের সন্তানরা। বাবা মায়ের নাম বাদ গেলে যে তাঁদের নামও ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ে আশঙ্কা রয়েছে। ফলে শহর কলকাতার গন্ডি ছাড়িয়ে জেলায় জেলায় গড়ে ওঠা বৃদ্ধাশ্রমগুলিতে গিয়ে ফের একবার পুরনো সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে কার্যত বাধ্য হচ্ছেন ছেলেমেয়েরা।
সময় বদলেছে। বদলেছে মানুষের চিন্তাধারা। বদল এসেছে দৃষ্টিভঙ্গিতে। বর্তমানে আমূল পরিবর্তন এসেছে সামাজিক পরিকাঠামোয়। যৌথ পরিবার ভেঙে হয়েছে অনু পরিবার। যুগের চিন্তাধারার সঙ্গে তাল মেলাতে না পারা বৃদ্ধ পিতামাতার ঠাঁই হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে। কেউ স্বেচ্ছায় কেউ বা অনিচ্ছায় জায়গা নিতে বাধ্য হচ্ছেন বৃদ্ধাশ্রমের নির্দিষ্ট পরিসরে। বহু জায়গায় স্রেফ টাকা পাঠিয়ে, ফোন করে দায় সারছেন ছেলেমেয়েরা। কেউ আবার ফোনটুকুও করেন না বলে জানাচ্ছেন বৃদ্ধাবাস পরিচালকমণ্ডলী। আর এখানেই বাদ সেধেছে এসআইআর। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিলি করা এনুমারেশন ফর্মে পিতামাতার নাম সহ ২০০২ সালে তাঁদের নাম ভোটার তালিকায় আছে কিনা দিতে হচ্ছে সে তথ্য। বস্তুত ভুলে যেতে চাওয়া বাবা মায়ের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের খোঁজ নিতে একপ্রকার বাধ্য হচ্ছেন ছেলেমেয়েরা। এ বিষয়ে বিভিন্ন বৃদ্ধাশ্রমের পরিচালকমণ্ডলী জানিয়েছেন, হঠাৎ করেই যেন তাঁদের হোমে সাড়া পড়ে গিয়েছে। ছেলেমেয়েরা আসছেন। দেখা করছেন বৃদ্ধ বাবা মায়ের সঙ্গে। যাচাই করে নিচ্ছেন তথ্য। স্বাক্ষর করাচ্ছেন এনুমারেশন ফর্মে। দৃশ্যত খুশি হলেও ছেলেমেয়েদের আসা যে আদতে দায়সারা তা মানছেন বৃদ্ধাশ্রমের বিভিন্ন আবাসিকরা। তাঁদের কথায়, প্রয়োজন মিটলেই সব পালাবে। তবে মুখে এ কথা বললেও সন্তানরা ভালো থাকুক, নিরাপদে থাকুক চাইছেন সকলেই। দিনের শেষে কাঁপা কাঁপা হাত তুলে তাঁদের প্রার্থনা একটাই-“আমার সন্তান যেন থাকে দুধেভাতে!”
সাব এডিটর – অনুরাধা ভট্টাচার্য্য শর্মা, সোমনাথ মুখোপাধ্যায় , প্রতীক চ্যাটার্জী
এডিটর – দিব্যেন্দু দাস
এডিটর ইন চিফ – ড: রাকেশ শর্মা
