*বিধায়ক পদ হারালেন মুকুল রায়, রাজ্য রাজনীতিতে নয়া মোড়*
নবনীতা পাল Rong News
রাজ্য রাজনীতিতে বড় মোড়। দলত্যাগ বিরোধী আইনে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুল রায়ের পদ খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। একই সঙ্গে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুকুল প্রসঙ্গে, সেটিও বাতিল করে দিয়েছে আদালত। ফলে ওই আসন এখন আনুষ্ঠানিকভাবে খালি। যদিও সূত্রের মতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন হওয়ায় সেখানে নতুন করে উপনির্বাচনের সম্ভাবনা আপাতত নেই।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়ে জয়ী হয়েছিলেন মুকুল রায়। ভোটের ফল ঘোষণার কিছু দিন পরই তিনি দল বদলে তৃণমূলে যোগ দেন। তবে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেননি। ফলে খাতায়কলমে তিনি বিজেপির বিধায়ক হিসেবেই থেকে যান। বিষয়টি নিয়ে বিজেপি বিধানসভার স্পিকারের কাছে অভিযোগ জানালে, অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মুকুল এখনও বিজেপিতেই আছেন, তাই তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ করা যাবে না। এমনকি তাঁকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যানও করা হয়, যে পদ সাধারণত বিরোধী দলের সদস্যের জন্য নির্দিষ্ট।
এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দলত্যাগ বিরোধী আইনে মামলা করেন। প্রথমে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হলেও শীর্ষ আদালত জানায়, এই বিষয়ে কলকাতা হাই কোর্টেই শুনানি করতে হবে। এর পর শুভেন্দু অধিকারী হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। অন্যদিকে, মুকুলের পিএসি চেয়ারম্যান পদে থাকা নিয়ে পৃথক মামলা করেছিলেন বিধায়ক অম্বিকা রায়। দুই মামলাই বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির বেঞ্চে একত্রে শুনানি হয়। বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করে আদালত জানায় যে, দলত্যাগ বিরোধী আইন অনুযায়ী মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ করা হল।
‘সংবিধানের জয়’, বললেন শুভেন্দু অধিকারী
রায় ঘোষণার পর শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “দেশের সংবিধান জিতেছে। বিধানসভার তৃণমূল অধ্যক্ষ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয় হয়েছে। বিজেপি আবারও প্রমাণ করল, সংবিধান রক্ষায় সে লড়াই করে।” এই প্রসঙ্গে তিনি সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “এটা ঐতিহাসিক রায়। পশ্চিমবঙ্গে এই ধরনের রায় প্রথম, সম্ভবত ভারতেও প্রথম। দেরিতে হলেও সত্যের জয় হল। আদালত সংবিধানের পবিত্রতা রক্ষা করেছে।”
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ভোটের পর তৃণমূলে ফেরা মুকুল রায় দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং সক্রিয় রাজনীতি থেকে কার্যত সরে গেছেন। এই অবস্থায় তাঁর বিধায়ক পদ ঘিরে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের অবসান ঘটাল হাই কোর্টের এই রায়।
সাব এডিটর – অনুরাধা ভট্টাচার্য্য শর্মা, সোমনাথ মুখোপাধ্যায় , প্রতীক চ্যাটার্জী
এডিটর – দিব্যেন্দু দাস
এডিটর ইন চিফ – ড: রাকেশ শর্মা
