জগন্নাথের রথযাত্রা এক বিস্ময়
সোমনাথ মুখোপাধ্যায়:Rong News
পুরী যাওয়া হয়নি এমন ব্যক্তি বিরল। শ্রীক্ষেত্র নীলাচল পুরীর অধিশ্বর জগন্নাথ মহাপ্রভু ও তাঁর রথযাত্রা উৎসব তো সমার্থক। হুগলির শ্রীরামপুর মাহেশ, গুপ্তিপাড়া, পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের রথযাত্রা মতো বিভিন্ন জায়গার রথযাত্রা বিখ্যাত হলেও পুরীর সম্বৎসরের মহোৎসব রথযাত্রা ধারে ও ভারে সবথেকে এগিয়ে। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে শ্রীমন্দির থেকে বেরিয়ে দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে রথে চড়ে মাসির বাড়ি যাবেন জগন্নাথ মহাপ্রভু। রথ টানবে হাজার হাজার মানুষ। একবার ফিরে দেখা সেই রথযাত্রাকে।
জগন্নাথ মহাপ্রভুর রথযাত্রার কথা পাওয়া যায় ব্রহ্মপুরাণ, পদ্মপুরাণ, স্কন্দপুরাণে। জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার তিনটি আলাদা রথ। জগন্নাথের রথ নন্দীঘোষ বা গরুড়ধ্বজ। রথ তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের কাঠের টুকরো দিয়ে যার সংখ্যা ২০৬। লক্ষ্যণীয় মানবদেহের হাড়ের সংখ্যা কিন্তু ওই ২০৬টি! রথ লাল ও হলুদ রংয়ের কাপড়ে আচ্ছাদিত। চাকার সংখ্যা ১৬ যা কিনা দশ ইন্দ্রিয় ও ছয় রিপুকে ইঙ্গিত করে! অর্থাৎ সব তাঁর অধীনস্থ। রথের রক্ষক গরুড়। সারথী দারুক। শঙ্খ, বল্হুক, শ্বেতা ও হরিদাশ্ব নামে চারটি সাদা ঘোড়া রথ টানছে।
বলরামের রথ তালধ্বজ বা লাঙ্গলধ্বজ। লাল ও নীলাভ সবুজ রংয়ের কাপড়ে আচ্ছাদিত। চাকার সংখ্যা ১৪ যা কিনা চোদ্দ ভুবনকে ইঙ্গিত করে। রথের রক্ষক বাসুদেব। সারথী মাতলী। রথ টানছে তীব্র, ঘোরা, দীর্ঘশর্মা ও স্বর্ণনাভ নামে চারটি কালো ঘোড়া।
সুভদ্রার রথ দর্পদলন বা পদ্মধ্বজ। লাল ও কালো রংয়ের কাপড়ে আচ্ছাদিত। চাকার সংখ্যা ১২ যা কিনা বারো মাস ভক্তি সহকারে ভজনের ইঙ্গিতবাহী। রথের রক্ষক জয়দুর্গা। সারথী অর্জুন। রথ টানছে রোচিকা, মোচিকা, জিতা ও অপরাজিতা নামে চারটি লাল ঘোড়া।
বিশ্বাস যে রথে আসীন জগন্নাথ মহাপ্রভুর দর্শনে পুনর্জন্ম হয় না! কিংবদন্তি যে একবার কিছুতেই এগিয়ে যেতে পারছিল না রথ। রাজার আদেশে হাতি দিয়েও বিন্দুমাত্র নড়ানো গেল না রথকে। তৎকালীন পুরীতে অবস্থান করছিলেন চৈতন্য মহাপ্রভু। তিনি এসে মাথা দিয়ে ঠেলতেই গড়াতে শুরু করেছিল রথের চাকা!
“জগন্নাথস্বামী নয়নপথগামী ভবতূমে!”
সাব এডিটর – অনুরাধা ভট্টাচার্য্য শর্মা, সোমনাথ মুখোপাধ্যায়,প্রতীক চ্যাটার্জী
ম্যানেজার – বুবুন মাইতি
এডিটর – দিব্যেন্দু দাস
এডিটর ইন চিফ – রাকেশ শর্মা