অশুভের বিনাশ শুভ শক্তির জয় ভূত চতুর্দশী
সোমনাথ মুখোপাধ্যায়:Rong News
ভূত চতুর্দশীতে ঘুরে বেড়ায় অসংখ্য ভূত প্রেত যাদের হাতে পড়লে আর নিস্তার নেই! ঠিক এ কথাই নিজেদের শৈশবে বাড়ির বড়োদের কাছে শুনেছেন বহু মানুষ। সত্যিই কি ভূত চতুর্দশীর রাতে ভূত প্রেতের বাড়বাড়ন্ত হয়? উত্তরে বলা যেতে পারে যে এর পিছনে রয়েছে জনশ্রুতি ও পৌরাণিক উপাখ্যানের যুগলবন্দি। সেদিকেই আলোকপাত করার চেষ্টা।
আদতে অশুভ শক্তির বিনাশ ও শুভ শক্তির জয় হিসাবে দেখা হয় ভূত চতুর্দশী তিথিকে। দুর্গাপুজোর পরেই কার্তিক মাসে দীপান্বিতা কালীপুজোর আগের দিন ১৪টি প্রদীপ বা বাতি জ্বালিয়ে পালন করা চতুর্দশী তিথি যা লোকমুখে ভূত চতুর্দশী বলে খ্যাত। বস্তুত ১৪ প্রদীপ বা বাতি ১৪ ভুবনকে ইঙ্গিত করে। এই দিন ওল, কেঁউ, বেতো, সরষে, কালকাসুন্দে, নিম, জয়ন্তী, শাঞ্চে, হেলেঞ্চা, পলতা, শৌলফ, গুলঞ্চ, ভাঁট ও শুষণী মোট ১৪টি শাক খাওয়ার নিয়ম যা আদতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে।
মানুষের মৃত্যু হলে তার পরিচয় হয় প্রেত রূপে। বিশ্বাস যে এই রাতে বাতি জ্বলে মূলত প্রেতের উদ্দেশ্যে। আলো জ্বালিয়ে বস্তুত স্মরণ করা হয় পরলোকগত পিতৃপুরুষদের। অন্য বিশ্বাস মতে ভূত চতুর্দশীর রাতে মৃত্যুর অধিপতি যমরাজকে প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজো করা হয় যা কিনা নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তির সহায়ক। ফলে এই তিথি নরক চতুর্দশী বলেও খ্যাত। এছাড়াও নরক পুজো, রূপ চতুর্দশী, ছোটা দেওয়ালি, রূপ চৌদাস, নরকা চৌদাস নামে দিনটি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পালন করা হয়ে থাকে। পৌরাণিক উপাখ্যান অনুযায়ী, কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে স্ত্রী সত্যভামাকে সঙ্গে নিয়ে নরকাসুরকে বধ করেন শ্রীকৃষ্ণ। ফলে দিনটিকে নরক চতুর্দশী বলা হয়ে থাকে। অন্যদিকে বামন অবতার রূপে দৈত্যরাজ বলীর মাথায় পা রেখে তাকে পাতালে পাঠিয়ে দেন ভগবান বিষ্ণু নারায়ণ। ভূত চতুর্দশীর রাতে পাতালের অধীশ্বর এই দৈত্যরাজ বলী অসংখ্য ভূত প্রেত সহ মর্ত্যে পুজো নিতে আসেন। অন্য মতে দেবী কালী মঙ্গলময়ী। তিনি চামুণ্ডা রূপে ১৪ ভূতকে তাঁর সঙ্গে আনেন ও অশুভ শক্তির বিনাশ করে ভক্তকে শুভ ফল দান করেন।

সাব এডিটর – অনুরাধা ভট্টাচার্য্য শর্মা, সোমনাথ মুখোপাধ্যায় , প্রতীক চ্যাটার্জী
এডিটর – দিব্যেন্দু দাস
এডিটর ইন চিফ – ড: রাকেশ শর্মা
